মাধবপুরে শালুকের হাট
হৃদয় এস এম শাহ্-আলম হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
অসাধরণ ভেষজগুন সম্পন্ন শালুকের অন্যতম পাইকারী হাট হবিগঞ্জের মাধবপুর। জেলার বিস্তীর্ণ হাওর এলাকার পানি কমার সাথে সাথে বাজারে ওঠছে প্রচুর পরিমাণে শালুক।
বর্ষায় পানির উপর ফোটা জাতীয় ফুল শাপলার দৃষ্টিকাড়া সৌন্দর্য যেমন আমাদের মুগ্ধ করে, তেমনি ওই গাছের গোড়ায় জন্মনো শালুক ভাতের বিকল্প খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
বর্ষা মৌসুমে হাওড়ের পানিতে জন্মানো শাপলা গাছের গোড়ায় একাধিক গুটি বড় হয়ে শালুকে পরিণত হয়। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবারে পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, কিশোগঞ্জের ব্যবসায়ীরা শত শত মন শালুক নিয়ে আসে মাধবপুরে।
আবার পাইকারদের হাতবদল হয়ে সেই শালুক চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ কুমিল্লা, সরাইল, ভৈরব, নরসিংদী, চাঁদপুরের মত দেশের বিভিন্ন জেলায়। গাড়ীভর্তি করে নিয়ে এসে বিক্রেতারা প্রতিমন শালুক বর্তমান মৌসুমে দেড় হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫শ টাকায় বিক্রি হয় বলে শ্রীমঙ্গল থেকে শালুক বিক্রি করতে আসা মনু মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়।
তিনি আরো বলেন, তাদের এলাকার তুলনায় মাধবপুরে শালুকের কদর বেশি থাকায় গত ৫/৬ বছর যাবৎ তারা এখানে নিয়ে আসেন। একেকটি শালুকের ওজন ৩০গ্রাম থেকে ৬০/৭০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। হজমশক্তি বৃদ্ধিকারক এ সবজিটি কাচা খাওয়ার উপযোগী হলেও আগুনে পুড়িয়ে কিংবা সেদ্ধ করে খাওয়া অত্যান্ত সুস্বাদু।
শালুক দ্রুত ক্ষুধা নিবারণের সাথে সাথে শরীরে পর্যাপ্ত শক্তিও যোগায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ এইচ এম ইশতিয়াক মামুন বলেন, শালুকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা স্নিগ্ধকারক, পিত্ত প্রশান্তিদায়ক, পিপাসা নিবারন করে।
তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এলার্জি ও প্রচুর আয়রন থাকায় অনেকের কুষ্টকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে শাপলা ফুল গাছের রাইজোমই শালুক নামে পরিচিত। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ভাটি বাংলার আদি ও জনপ্রিয় এই ফল কাঁচা ও সিন্ধ করে খাওয়া যায়।
Leave a Reply