লেখক: মোঃ আমিনুর ইসলাম
উৎসর্গ যাদের রক্তের বিনিময়ে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না,
যে অতীত আমাকে যন্ত্রনা দেয়,কষ্ট দেয়।
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না,
যে অতীত আমাকে বিষণ্ণ দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দেয়।
মনে করিয়ে দেয়,সেই ১৯৪৮-১৯৫২ সাল ভাষা আন্দোলন,
রাজপথে রক্ত দিয়েছে শফিক, রফিক, জব্বার আরো কতজন।
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না,
যে অতীত আমাকে অজশ্র শহিদের কথা মনে করিয়ে দেয়।
মনে করিয়ে দেয়, পাকিস্তানি শাসকদের ২৪ বছরের বৈষম্যের কথা,
বাঙালি জাতীয় জীবনে রয়েছে হাজারো ব্যথা।
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না,
যে অতীত আমাকে যন্ত্রনা দেয়, কষ্ট দেয়।
মনে করিয়ে দেয়, ছয় দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সাল,
আইয়ুব-মোনায়েম খান বেঁধেছিল নানারকম জ্বাল।
অত্যাচারী,স্বৈনাচারী,আইয়ুব-মোনায়েম খানের পতন,
যার ফল ৬৯ এর গণআন্দোলন।
আইয়ুব খানের নেতৃত্বে শুরু হয় নির্যাতন,লাঠিচার্জ গুলিবর্ষণ,
হাজারো মা-বোনদের করেছে ধর্ষন।
শান্তিতে বসবাস করে কেটে যায় তাদের প্রহর,
১৯৬৯ এর ১৬ ফেব্রুয়ারি দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে ঢাকা শহর।
১৯৭০ সালের নির্বাচন
জনগনের ভোটে আসন করছিলাম অর্জন।
কিন্তু হায়!
শেখ মুজিবর রহমান যেন ক্ষমতায় না যায়,
চরম ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের আমলা শিল্পপতি লিপ্ত হন।
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না,
যে অতীত আমাকে বর্বর হত্যাযজ্ঞের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়।
মনে করিয়ে দেয়,১৯৭১ সাল ২৫ শে মার্চ কালরাতে,
হাজারো লোকদের জীবন যৌবন হয় হারাতে।
২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে রাত দেড়টায়,
বাংলার সর্বাধিনায়ক নেতা শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
পাকিস্তানি সৈন্যচার করে অত্যাচার,
নিরীহ নর-নারী হত্যা হয় ৫০ হাজার।
শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমিক তার নেই শুমার।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত যুবসমাজ ও নরনারী,
সহযোগীতা করেছে আল-শামস,আল-বদর ও রাজাকারী।
প্রায়,ধর্ষিত হয়েছে ৬ লক্ষ নারী।
১৯৭১ সাল ১৪ ডিসেম্বর
হিসাব ছাড়া বুদ্ধিজীবী করেছে রক্তঝর।
হত্যা হয়েছে শিক্ষক-গবেষক,লেখক-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীগন,
বাঙালি জাতীর অন্তরে বেঁচে রবে আজীবন।
বেয়নটের আঘাতে হয়েছিল যাদের দেহ ক্ষত- বিক্ষত,
তাদের মতো কেউ কি আর জম্মিত?
পাকিস্তানি শাসকদের ২৪ বছর,
শেখ মুজিবকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে ১২ বছর।
কিন্তু দুঃখের বিষয়-,
মাত্র তিন বছর,সাত মাস, তিন দিন দেশ চালানোর সুযোগ হয়।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সাল কলঙ্কময় একটি দিন,
এক সাগর রক্তে শোধ হবে না এ ঋণ।
নেতৃত্ব প্রদান করে মহিউদ্দিন,হুদা,মেজর পাশা,
সেই দিন বয়ে আনে বর্বর হত্যাযজ্ঞ সর্বনাশা।
সর্বাধিনায়ক নেতা ও তার পাঁচ পরিবার,
নির্মম ও নৃশংস হত্যা করে মোশতাক খন্দকার।
১৫ ই আগস্ট, ঘুমিয়ে গেল সহপরিবার,
ঘুম ভাঙল শুনে হট্টগোল ও চিৎকার।
গুলি চালায় বুক নিশানা করে ঘাতকের দল,
তার বুকে বেঁধেছিল ১৮ টি গুলি নিচ্ছল।
আক্রমন করেছিল ঘাতকের এক ধামাল,
হত্যা হয় শিশুপুত্র রাসেল,কামাল ও শেখ জামাল।
এমনি করুন, নির্মম, হৃদয়বিদারক,
পাশবিক হত্যা করা হয় ১৮ জন সদস্যক।
কিন্তু হায়!
দেশান্তর হওয়ায়,
দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা প্রানে বেঁচে যায়।
কি বলব আর ইতিহাস?
বয়ে আনে সর্বনাস।
এই ব্যথা প্রাণে আর সহ্য হয় না,
আমি আর অতীতের কথা মনে করতে চাই না।
সংগৃহীত :দ্বশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর পৌরণীতি এবং ইতিহাস বই থেকে।
লেখকের যোগাযোগ নাম্বার:01627957411
Leave a Reply